পদার্থ বিজ্ঞানী এরউইন স্রোডিনজার তার What is Life? বইতে প্রথম ধারণা দেন DNA এর ব্যাপারে। তিনি তার বইয়ে তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে এপিরিয়ডিক ক্রিস্টাল নামক একটি অণু সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করেন। যা বংশ পরম্পরায় জীব দেহের তথ্য সংরক্ষণ করে ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়। এর প্রায় ১০ বছর পরে ১৯৫০ সালে ফান্সিস ক্রিক ও জেমস ডি ওয়াটসন ডিএনএ’র গঠন নিয়ে কাজ করে পরবর্তীতে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হন।
এই ডিএনএ গঠিত হয় cytosine (C), guanine (G), adenine (A), ও thymine (T) নামক নাইট্রোজেন অণুর সমন্বয়ে। ব্যাক্টেরিয়া থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত সকল জীবের ডিএনএ এর Molecular code হচ্ছে C-G-A-T. জীবের শারীরিক বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে ডিএনএ এর মলিকুলার কোডের একেক ধরণের বিন্যাসের (combination) ফলে।
Synthorx নামক বায়োটেকনোলজি কোম্পানি সম্প্রতি কৃত্রিম ডিএনএ তৈরির ব্যাপারে অনেকখানি সফলতা অর্জন করেছে। C-G-A-T ছাড়াও তারা ডিএনএ অণুতে X ও Y নামক নতুন দুটি কৃত্রিম base (d5SICSTP ও dNaMTP) যুক্ত করেছে। ডিএনএ এর প্রতিলিপি (replication) তৈরির আগে কোন অনাকাংক্ষিত বস্তু ডিএনএ তে অনুপ্রবেশ করেছে কিনা বা কোন একটা অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হল কিনা সেটা (DNA proof reading এর মাধ্যমে) সে পরীক্ষা করে। যদি জীবদেহের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু তাতে পাওয়া যায় তাহলে সেটিকে বাদ দিয়েই রেপ্লিকেশন বা অনুলিপি তৈরি করে। কৃত্রিম ডিএনএ এর গবেষণায় এটিই সব চেয়ে বড় বাধা। সিনথোর্ক্স এর গবেষক দল নতুন বেজ দুটিকে একটি ই-কোলাই ব্যাক্টেরিয়ার প্লাজমিড ডিএনএ তে প্রবেশ করান। পরবর্তীতে দেখা যায় ব্যাক্টেরিয়ার ঐ ডিএনএ অণুটি অত্যন্ত সফল ভাবে replication করতে পেরেছে। কৃত্রিম ডিএনএ তৈরির মূল চ্যালেঞ্জটি তারা এরই মাধ্যমে অতিক্রম করতে পেরেছেন বলে ধরা যায়। এর মাধ্যমে যেন উন্মোচিত হল নতুন প্রাণ সঞ্চারের সম্ভাবনাময় দিগন্ত!
এখন পর্যন্ত অনেকটা তাত্ত্বিক গবেষণার পর্যায়ে থাকলেও Synthorx এর আশা যে তারা নতুন ধরণের প্রোটিন তৈরি করে সম্পূর্ণ নতুন ধরণের প্রাণী তৈরি করতে সক্ষম হবেন। সম্পূর্ণ প্রাণী জগতের সকল mechanism ২০ টি Amino acid এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে এই গবেষণার ফলে জীব দেহে ১৭২ টি এমিনো এসিড তৈরি করা সম্ভব হবে বলেও তারা জানান।
এই নতুন genetic alphabet এর সংযোজন নতুন ধরনের Diagnostic tool, vaccine, antibiotic তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সব উন্নতি সাধন সম্ভব হবে হয়ত এই Synthetic DNA এর মাধ্যমে। মানবজাতি হয়ত অবাক বিস্ময়ে আরেকবার ধন্যবাদ জানাবে সত্যান্বেষী বিজ্ঞানীদের যারা খুলে দিবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।
Tech Analyst – Techmorich