Pokemon Go এর সফলতার নেপথ্যে মনস্তাত্তিক বিশ্লেষণ – পর্ব ২

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬

গেম গবেষকদের মতে “একটি গেম তখনি সফল হয় যখন সেটি একজন খেলোয়াড়ের তিনটি চাহিদা পূরণ করতে পারে –

  • প্রতমত খেলার সময় নিজের আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠা।
  • দ্বিতীয়ত অনুস ন্ধানীর পরিবেশ সৃ ষ্টি করা।
  • তৃতীয়ত একে অপরের সাথে সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করা।

এই তিনটি চাহিদা পূ রণ করে যে গেম সেটি অবশ্যই সফল গেম।

আর এই বিষয়গুলো সত্যি হয়েছে Pokemon Go গেম এর ক্ষেত্রে যা একে সাফল্যের চূড়ান্তে পৌঁছে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। পকেমন গো এর মধ্যে নরিস এর সবচেয়ে প্রিয় বিষয়টি হলো, এই গেম এর মাধ্যমে ব্রাইটন শহরের আনাচে কানাচে ঘুরে  বেড়ান যায়। তিনি বলেন “খেলার সময় বিভিন্ন পকেসপট পয়েন্ট এ যেতে হয়। আর পয়েন্টগুলো থাকে বিভিন্ন জায়গার পথ শিল্পে। এই সুবাধে ব্রাইটন  শহরের বিভিন্ন অজানা পথ আর শিল্পকর্ম  আমার চোখে পড়েছে।”

দেখা  যাচ্ছে মানুষ রাতের বেলায়  রাস্তায় বিভিন্ন পকেমন ধরতে বের হচ্ছে। এই অদ্ভুত বিষয়টি সম্ভবত পকেমন গো এর চরম সাফল্যের  একটি মূল  অংশ।  বর্তমানে এই গেম টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।

ব্রিটিশ উপস্থাপক এবং লেখক চার্লি ব্রুকের মতে টুইটার হচ্ছে তার প্রিয় ২৫ টি ভিডিও গেম এর মধ্যে একটি। এখন প্রশ্ন আসে টুইটার কি ভিডিও গেম? ব্রুকের মতে  টুইটার এর গ্রাফিকাল ইন্টারফেস আর পয়েন্ট ভিত্তিক প্রতিযোগিতার পদ্ধতি যেমন ফলোয়ার এর সংখ্যা বৃদ্ধি গেম এর মতই তার কাছে মনে হয়। যদি সোশাল  মিডিয়াকে  একটি ভিডিও গেম এর মত চিন্তা করতে গেলে তর্কের সৃ ষ্টি  করলেও, পক্ষান্তরে পকেমন গো গেমটি এই চিন্তার সমর্থন করে। এই খেলার স্রষ্টাদের উদ্দেশ্য ছিল কিনা জানিনা তবে এই খেলার খেলোয়াড়রা তাদের অভিজ্ঞতা আর meme-ify, reddit, snapchat and imgur এর মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলে থাকে যা এই গেম এর মুল আবেদন।

তাহলে বোঝা’ই যাচ্ছে পকেমন গো শুধু মাত্র একটি অ্যাপ এর সিমাবদ্ধতায় না থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধমেও  সরব বিচরণ করছে।

মনোবিজ্ঞানীরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সত্যিকারের জনপ্রিয়তা বুঝতে পারছেন। এর মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে নিজের অনুভূতি আর  অভিজ্ঞতা অন্যকে বলতে পারা।  যদি এই কাজটি নন ভার্চুয়াল জগতে  করা যায় তবে ভার্চুয়াল জগতে  এটি বিভিন্ন সুবিধা বয়ে আনে যেমন নতুন বন্ধু অথবা নতুন যোগাযোগ এর মাত্রা বেড়ে যাওয়া।

এই গেম এর সবচেয়ে মজার বিষয় হল একজনের সাথে আরকজনে দেখা হওয়া, যখন কোন জায়গায় পকেমন ধরতে যাওয়া হয়। এই দেখা হওয়া সম্পর্কের নতুন মাত্রা যোগ করে অনলাইন  আর অফলাইন জগতে। এই বিষয়টি একটু ব্যাতিক্রম।

Przybylski জোড় দিয়ে  বলেন “পকেমন গো হচ্ছে  এই সোশাল  মিডিয়ার যুগে উপযুক্ত একটি  খেলা, আমরা আগে থেকেই এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। প্রস্তুতি করতে সাহায্য  করেছে সোশাল মিডিয়াই। কেননা সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আধুনিক যুগের মানুষদের পকেমন গো খেলার জন্য আগে থেকেই প্রশিক্ষণ  দিয়েছে। তিনি বলেন “অনলাইন জগতে খেলে আর এই বিষয় নিয়ে কথা বলা মারক জুকারবার্বেগের মূল মন্ত্রের কথা মনে করিয়ে দেয় । তার মতে “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল স্বচ্ছ  কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা অন্যান্যর সাথে ভাগ করে নেয়া উচিত। এটি ব্যাবহারকারির আর যার দরকার তাদের জন্য আবেদনময় ।”

যদিও পকেমন গো এর আবেদন  কদিন টিকে থাকে সেটি এখনও বোঝা যাচ্ছেনা, কারণ এই খেলাটি একদম নতুন। কিন্তু এই খেলার রাতারাতি সাফল্যতার কারণ হল পকেমন গো খেলাটি মানুষে র সুপ্ত ইচ্ছের বিষয়টি প্রকাশ করতে সমর্থ  হয়েছে। আপনি গেম খেলুন আর নাই খেলুন এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে।

Source – Pokemon Go, TC, TNW

Sumayah Binthe Khurshid
TechWriter – Intern