Pokemon Go এর সফলতার নেপথ্যে মনস্তাত্তিক বিশ্লেষণ – পর্ব ১

August ১০, ২০১৬

“এই গেমটি ডাউনলোড করার একমাত্র কারণ ছিল আমার অনেক বন্ধু যারা আমেরিকায় থাকে তারা এই গেমটির একনিষ্ঠ ভক্ত।” বললেন জন নরিস। “যদিও তারা সম্মানিত বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তিগন, কিন্তু তারা এই গেমটির খেলার প্রতি অস্বাভাবিক ভাবে আসক্ত।”

এই কথাগুলি বলছিলেন নরিস, যিনি ব্রাইটন এ ডিজিটাল এজেন্সি রকেটমিল কোম্পানির একজন কন্টেন্ট প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলছিলেন “Pokemon Go” গেম সম্পর্কে।

“Pokemon Go” হচ্ছে এই মুহূর্তে’র বহুল আলোচিত নতুন একটি মোবাইল গেম যা বাস্তব খেলার অনুভূতি দিতে সক্ষম।

গেমটি আমেরিকায় আসার মাত্র এক সপ্তাহ এর মধ্যে অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে লক্ষবার। গেম টি খেলার নিয়ম হচ্ছে ভার্চুয়াল ভাবে পকেমন চরিত্র টি খুঁজে তাকে ধরা। পকেমন ক্যারেক্টারটি কিন্তু যেকোনো জায়গায় যেকোনো প্রান্তে  থাকতে পারে।

যদিও ইউকে তে এখন অ্যাপটি সরকারি ভাবে চালু হয়নি কিন্তু নরিস এর মত আগ্রহী খেলোয়াড়রা খেলাটি অন্য টেকনিকাল উপায়ে ডাউনলোড করে খেলতে পারে।

কথায় আছে, বিখ্যাত হবার পথ সর্বদাই কন্টকপুর্ন। এই অ্যাপটির ক্ষেত্রেও কিছু বিতর্ক আছে। সবাই মনে করছে  খেলাটি ইন্সটল করার সময় ইমেইল, গুগল ড্রাইভ এর প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সহজে পাচার হওয়ার শঙ্কা আছে।  তাহলে কেন এই খেলাটি এত জনপ্রিয়? আগে থেকেই কি এর জনপ্রিয়তা পরিকল্পিত ছিল?

অক্সফোর্ড ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের মনোবিজ্ঞানী Andrew Przybylski গবেষণা করছেন, কোন বিষয়গুলো একটি গেমকে জনপ্রিয় করে তোলে এই বিষয়ের উপর।  হয়ত খেলাটি মনের মত করে বানানো হয়েছে যাতে খেলার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হয়। গবেষকের মতে,এই খেলার অন্যতম প্রধান দিকটি হল ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা  দূর করে ভাল সময় কাটানোর বিষয়টি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

“Pokemon Go” এর পকেমন চরিত্র টি অনেকের কাছেই পরিচিত, বিশেষ করে স্মার্ট ফোন আর জিপিএস ব্যাবহারকারিদের কাছে।  তারা যদি জিওকাচিং প্রযুক্তিটি আরও ভালভাবে রপ্ত করে যেটি জিপিএস এর উন্নত ভার্সন এবং ভার্চুয়ালই শারীরিক কসরত প্রদর্শন করতে পারে  তাহলে গেম টি জনপ্রিয় হবে না কেন?

Przybylski  এর মতে, পূর্বের অনেক গেম রয়েছে যারা অনেক প্রশংসা পেয়েছে, প্রথাগত গেম যেমন snake ,angry birds এবং আরও wii সিরিজ এর গেম। এই গেম গুলো যখন  উন্নত প্রযুক্তির গেম এ রূপান্তর করা হয়েছে তখনই  প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এইসব গেম এর প্রযুক্তি  নতুন হলেও খেলা সহজ ছিল।

তিনি আর বলেন “ মানুষ যেমন ফোন ব্যাবহার সহজে শিখে  ফেলেছে তেমনি wii টেনিস খেলাতে শরীর এর ব্যাবহার ও তাদের জানা। নিয়ম আগেই শেখা হয়ে গেছে।  নরিস এর মতে, “গেম আয়ত্তে আনা খুব  সহজ”।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে স্মৃতি কাতরতা। যদিও নরিস আগের কোন পকেমন গেম খেলেননি, কিন্তু যারা Pokemon Go খেলাটি খেলছে তাদের অনেকেই ১৯৯৬ সালের প্রথম পকেমন গেমটি খেলের স্বাদ  পেয়েছে। পুরানো পকেমন ফ্যান রা পকেমন কে আবার নতুন করে পেয়েছে এই Pokemon Go গেম এর কারণে। কিন্তু আরেকটি বিষয় হল শুধু  মাত্র স্মৃতির উপর ভিত্তি করে কোন গেম জনপ্রিয়তা পায়না বরং তাকে খেলার সময় সেই মজাদার অনুভূতি দিতে সক্ষম হতে হবে। মনে হয় Pokemon Go সেই অনুভূতি সফল ভাবেই দিতে পেরেছে বলে জানায় তার ভক্তদের।

চলবে ……
Source – Pokemon Go, TC, TNW

Sumayah Binthe Khurshid
TechWriter – Intern