বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি

December ২৪, ২০১৫

আমরা এখন প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় বায়োমেট্রিক্স শব্দটি  শুনি বা পত্রপত্রিকায় পড়ি। কি এই বায়োমেট্রিক্স ?
বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ করার বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি। গ্রীক শব্দ “bio” (life) ও “metric” (to measure) থেকে উৎপত্তি হয়েছে (Biometrics)  বায়োমেট্রিক্স।  তথ্য প্রযুক্তিতে বায়োমেট্রিক্স হল সেই প্রযুক্তি যা মানুষের দেহের বৈশিষ্ট যেমনঃ ডিএনএ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের রেটিনা এবং আইরিস, কণ্ঠস্বর, চেহারা এবং হাতের মাপ ইত্যাদি মেপে এবং বিশ্লেষণ করে বৈধতা নির্নয় করে। কম্পিউটার পদ্ধতিতে নিখুঁত নিরাপত্তার জন্য বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যাবহারিত হয়। এ পদ্ধতিতে মানুষের বায়োলজিক্যাল ডেটা কম্পিউটারের ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে রাখা হয় এবং পরবর্তিতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। ডেটাতে মিল পেলে বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং অনুমতি প্রাপ্ত হয়।

বিশেষ ব্যক্তিকে সনাক্ত করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি কী, এর উন্নয়ন, প্রয়োজনীয়তা এবং সুবিধাদি সম্পর্কে চলুন আরও একটু বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

সহজ একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করলে আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে। অনেকেই হয়ত লক্ষ্য করেছেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গেটে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর লাগানো থাকে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে কারা ঢুকতে পারবে আগে থেকেই তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে কম্পিউটারে বিশেষ নিরাপত্তা সফটয়ারের ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে রেখে দেয়া হয়। গেটে আগত প্রবেশকারীরা আঙ্গুল দিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের বিশেষ স্থানে চাপ দিলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট তৈরি হয়ে তা কম্পিউটারে যাবে এবং কম্পিউটারে রক্ষিত ফিঙ্গারপ্রিন্টের সাথে মিলিয়ে দেখবে। যদি মিলে যায় তাহলে গেট খুলে যাবে আর মিল না পেলে গেট খুলবে না। এই ফিঙ্গারপ্রিন্ট হলো এখানে একটি বায়োলজিক্যাল ডেটা। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ হল ইউনিক আইডেনটিটি। একজনের আঙ্গুলের ছাপের সাথে অন্যজনের ছাপ কখনও মেলে না। আর এই আঙ্গুলের ছাপকে ব্যাবহার করে কম্পিউটার সফটওয়্যার নির্ভর যে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা করা হয় তা-ই হলো বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি।

বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ (Classification of Biometrics) –  দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্টের  উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন – ১। দেহের গঠন ও শরীরবৃত্তীয় বৈশিষ্টের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি – মুখ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হ্যান্ড জিওমেট্রি, আইরিস, রেটিনা এবং শিরা।
২। আচরণগত বৈশিষ্টের  বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি – কণ্ঠস্বর, সিগনেচার, টাইপিং কী স্ট্রোক ।

বায়োমেট্রিক্স এর ব্যবহার – (Application of Biometrics) – বর্তমানে নিরাপত্তার কাজে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যাবহারিত হচ্ছে। এ প্রযুক্তি সাধারণত দুই ধরনের কাজে ব্যাবহারিত হয়। যেমন – ১। ব্যাক্তি সনাক্তকরণ (Identification) ২। সত্যতা যাচাই (Verification)

বর্তমানে সবচেয়ে বেশী প্রচলিত বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিগুলো হল – ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার ( Finger reader), ফেইস রিকগনিশন (Face recognition), হ্যান্ড জিওমেট্রি (Hand Geometry), আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান(Iris and Retina Scan), ভয়েস রিকগনিশন (Voice Recognition) ও সিগনেচার ভেরিফিকেশন (Signature Verification)।

Mehnaz Techwriter