Deadliest disease

যে ৫টি রোগের চিকিৎসা নেই

September ৮, ২০১৯

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বহু রোগ গবেষণা করে ঔষধ ও চিকিৎসা আবিস্কার করতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। কিন্ত মানবদেহে এমন কিছু রোগ আছে যার চিকিৎসা এখনো মেডিক্যাল সায়েন্স আবিস্কার করতে পারেনি। বহু চেষ্টা প্রচেষ্টার পরও এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা বের করা যায়নি। সাধারণ চিকিৎসা, কাউন্সিলিং, পুনর্বাসন দিয়েই চলছে এসব রোগের নিরাময়। বিশ্বব্যাপী দূরারোগ্য এমন ৫ টি রোগের আলোচনা থাকছে এই পর্বে।

এইডসঃ একেবারে প্রথমেই রয়েছে এইডস। বিশ্বব্যাপী এইডস চিকিৎসার কার্যকর ব্যবস্থা এখনো আবিষ্কার হয়নি। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত এইডস রোগীর আরোগ্য লাভের সংখ্যা কেবল একজন। এখন পর্যন্ত যার সংখ্যা দুই’য়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুজনই শরীরে স্টেম সেল (এখান থেকে অন্যান্য কোষ, টিস্যু, অরগান, বোন ডেভেলপ হয়) ট্রান্সপ্লান্ট করে এইডস থেকে মুক্তি পেয়েছে। স্টেম সেল মানবদেহের একেবারই প্রাথমিক কোষ। এইডস মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শেষ করে দেয়। একবার এইচআইভি মানবদেহে সংক্রমণ হলে তা মৃত্যুর দিকে নিতে শুরু করে। এইডসের চিকিৎসা নিয়ে এখনো অনেক গবেষণা চলছে। এখনও পর্যন্ত ডাক্তাররা নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, এমন ঘোষণা দিতে পারছেন না।

আলঝাইমারঃ এটি মূলত নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ। যা ধীরে ধীরে রোগীর শরীর খারাপ করতে থাকে। মস্তিস্কজনিত সমস্যা হওয়ায় দেখা যায়, রোগীর স্বাভাবিক কিছুই মনে থাকছে না। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্টের প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষ একা থাকে। যাদের বেশিরভাগ মানুষের বয়স ৬৫ ছাড়িয়েছে। নিউরনের কার্যকারীতা কমিয়ে ফেলার ফলে, তার মেমরি লস হতে থাকে। কগনিটিভ সক্ষমতা কমে যায়। আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মেজাজ পরিবর্তন হয়ে যায়। উদাসীনতা বাড়ে। জেনেটিক কারণে রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। এই রোগটি ৭০% মানুষের জিনগত কারণে হয়। বাকি ৩০% মাথায় আঘাত খেলে, উচ্চ রক্তচাপ বা হতাশা থেকে হতে পারে। কেবল ২০১৫ সালে আলঝাইমার আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী ১৯ লাখ মানুষ মারা গেছে।

ইবোলাঃ ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণ হয় এডিস মশার মাধ্যমে। জ্বর, মাথাব্যথা সহ পুরো শরীরে তীব্র ব্যথা ইত্যাদি তৈরি করে। এখন পর্যন্ত ইবোলার নির্দিষ্ট ঔষধ বা চিকিৎসা ব্যবস্থা আবিস্কার হয়নি। ইবোলার কারণে ২৫% থেকে ৯০% মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকে। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৫০%। ২০১৩ এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ এর জানুয়ারি পর্যন্ত শুধু পশ্চিম আফ্রিকায় ২৮,৬৪৬ রোগীর ১১,২৩২ জন মারা যায়।

পারকিনসনঃ পারকিনসন রোগ শরীরের মূল নার্ভাস সিস্টেমকে ডিজঅর্ডার (স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল) করে ফেলে। এর অপর নাম প্যারালাইসিস এজিট্যান্স। নিউরো-ডিজেনারাটিভ রোগের মাঝে এটি দ্বিতীয় মারাত্মক রোগ হিসেবে পরিচিত।  সাধারণত এক হাতে বা মাথায় মৃদুকম্পন দেখা যায়। এছাড়াও বিষাদগ্রস্থ ভাব চলে আসে। ভারসাম্যহীনতা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা যায়, জেনেটিক বা পরিবেশগত কারণে এধরণের রোগের ঝুঁকি থাকতে পারে। কিন্তু আসলেই এর কারণ কি তা চিহ্নিত করা যায়নি। এ রোগেরও চিকিৎসা আবিস্কার হয়নি। তবে, এ রোগের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। এ অবস্থায় ডাক্তাররা ব্রেইন সার্জারির জন্য প্রেসক্রাইব করেন। এছাড়াও খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন এবং কিছু কার্যকর পুনর্বাসন এর মাধ্যমে উন্নতির চেষ্টা করা হয়। কেবল ২০১৫ সালে ১লক্ষ ১৭হাজার ৪০০ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

সিজোফ্রেনিয়াঃ এটি একটি মানসিক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে মানুষের আচরণে আমূল পরিবর্তন আসে। অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। বিভিন্ন রকমের হ্যালুসিনিশন তার মাঝে হতে থাকে। মিথ্যা বিশ্বাস তৈরি হয়। অযথা অন্যের কথা শুনতে থাকে। ক্রমশঃ রোগীকে বাস্তবতা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। তার মাঝে একধরণের শারীরিক অক্ষমতা তৈরি হয়। এক্ষেত্রেও গবেষণা বলছে, জিনগত কারণে এধরণের ঝুঁকির মাত্রা বেশি থাকে। কিন্তু শুধুমাত্র জেনেটিক কারণেই যে এটি হতে পারে সে বিষয়ে ডাক্তাররাও ঠিক জোড় করে বলতে পারছেন না। যদিও এটি সম্পূর্ন নিরাময়ের কোন উপায় এখনো আবিষ্কার হয়নি। কিন্তু আর্লি স্টেজে ধরা পড়লে এন্টিসাইকোটিক্স মেডিকেশন, কাউন্সিলিং বিভিন্নভাবে মানসিক অক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে থাকে। সাধারণত ১৬ থেকে ৩০ বয়সের মাঝেই এটি দেখা দেয়। ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এর মাঝে ২০% মোটামুটি সুস্থ হয়। খুবই কম সংখ্যক মানুষ পুরোপুরি সুস্থ্য হয়। এ রোগের ৫% মানুষ আত্মহত্যায় সমাধান খুঁজে।


– হামিমুর রহমান ওয়ালিউল্লাহ

  1. https://www.anthonynolan.org/patients-and-families/understanding-stem-cell-transplants/what-stem-cell-transplant
  2. Mendez MF (November 2012). “Early-onset Alzheimer’s disease: nonamnestic subtypes and type 2 AD”. Archives of Medical Research. 43 (8): 677–85.
  3. Ballard C, Gauthier S, Corbett A, Brayne C, Aarsland D, Jones E (March 2011). “Alzheimer’s disease”. Lancet. 377 (9770): 1019–31.
  4. Burns A, Iliffe S (February 2009). “Alzheimer’s disease”. BMJ. 338: b158.
  5. GBD 2015 Mortality Causes of Death Collaborators (October 2016). “Global, regional, and national life expectancy, all-cause mortality, and cause-specific mortality for 249 causes of death, 1980-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015”. Lancet. 388 (10053): 1459–1544.
  6. “Ebola virus disease” (Press release). World Health Organization (WHO). 12 February 2018.
  7. Ebola virus disease (Report). World Health Organization. Retrieved 6 June 2019.
  8. “Parkinson’s Disease Information Page”. NINDS. 30 June 2016. Archived from the original on 4 January 2017. Retrieved 18 July 2016.
  9. MedicineNet, MedicineNet (2012 [last update])। “Parkinson’s Disease Stages, Symptoms, Causes, and Prognosis by MedicineNet.com”
  10. Kalia LV, Lang AE (August 2015). “Parkinson’s disease”. Lancet. 386 (9996): 896–912. 
  11. “Parkinson’s Disease Information Page”. NINDS. 30 June 2016. Archived from the original on 4 January 2017. Retrieved 18 July 2016.
  12. Barichella M, Cereda E, Pezzoli G (October 2009). “Major nutritional issues in the management of Parkinson’s disease”. Movement Disorders. 24 (13): 1881–92.
  13. GBD 2015 Mortality Causes of Death Collaborators (October 2016). “Global, regional, and national life expectancy, all-cause mortality, and cause-specific mortality for 249 causes of death, 1980-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015”. Lancet. 388 (10053): 1459–1544.
  14. “Schizophrenia Fact sheet N°397”. WHO. September 2015. Archived from the original on 18 October 2016. Retrieved 3 February 2016.
  15. “Schizophrenia”. National Institute of Mental Health. January 2016. Archived from the original on 25 November 2016. Retrieved 3 February 2016.
  16. Owen MJ, Sawa A, Mortensen PB (July 2016). “Schizophrenia”. Lancet. 388 (10039): 86–97.
  17. Owen MJ, Sawa A, Mortensen PB (July 2016). “Schizophrenia”. Lancet. 388 (10039): 86–97.
  18. “Schizophrenia”. National Institute of Mental Health. January 2016. Archived from the original on 25 November 2016. Retrieved 3 February 2016.
  19. Global Burden of Disease Study 2013 Collaborators (August 2015). “Global, regional, and national incidence, prevalence, and years lived with disability for 301 acute and chronic diseases and injuries in 188 countries, 1990-2013: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2013”. Lancet. 386 (9995): 743–800.
  20. American Psychiatric Association (2013). Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders (5th ed.). Arlington: American Psychiatric Publishing. pp. 101–05.
  21. Hor K, Taylor M (November 2010). “Suicide and schizophrenia: a systematic review of rates and risk factors”. Journal of Psychopharmacology. 24 (4 Suppl): 81–90