রক্ত দেয়া বা নেয়ার সময় যে পরীক্ষাগুলো করা জরুরী

সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৫

আমরা অনেকেই আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী চার মাস পরপর বিভিন্ন ধরণের রুগিকে রক্তদান করে থাকি। রক্তদান করার পূর্বে রক্তদাতার রক্তের বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। এই পরীক্ষা-নিরিক্ষার খরচ রুগির অভিভাবক বহন করলেও লাভটা কিন্তু রক্তদাতাদেরই হয়ে থাকে। এই blood test-গুলোর মাধ্যমে blood donor তার সুস্থতার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারে। পুরো রক্তদানের প্রক্রিয়ায় একজন রক্তদাতার কি কি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয় তা আজ জানব।

রক্তচাপ ও ওজন

রক্তদানের পূর্বে প্রথমেই রক্তদাতার রক্তচাপ (blood pressure) মাপা হয়। কারণ স্বাভাবিক রক্তচাপ না থাকলে রক্তদানের ফলে রক্তদাতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তদানকালীন সময় দাতার high blood pressure বা low blood pressure উভয়ই ক্ষতিকর। তাই blood donor রক্তদানের মাধ্যমে নিজের রক্তচাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। একই সাথে তার ওজনও মাপা হয়। শরীরের উচ্চতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে যতটুকু ওজন থাকা উচিত তা না থাকলে রক্ত দান করা উচিত নয়। এই দুটি বিষয় হচ্ছে blood donation এর নূন্যতম যোগ্যতা।

রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ক্রস ম্যাচিং

প্রতিবার রক্তদানের পূর্বেই রক্তদাতার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় (blood grouping) করা হয়। যার ফলে প্রথম বার রক্তদান করবেন এমন blood donor-রা নিজের রক্তের গ্রুপের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর পরীক্ষা করা হয় রুগির রক্তের সাথে দাতার রক্তটি ঠিক ভাবে মিশছে কিনা। যাকে বলা হয় Cross matching করা। রক্তদাতার রক্তের সাথে সাধারণত রুগির রক্ত ঠিক মতই মিশে। খুব কম সময়েই দেখা যায় যে ক্রস ম্যাচিং হচ্ছে না।

এইডস (HIV Test)

HIV virus যেহেতু রক্তের মাধ্যমে একজনের থেকে অন্য জনের দেহে যেতে পারে তাই রুগির সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে রক্তদাতার রক্তে AIDS এর জীবাণু আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়। এ জন্য HIV-1 ও HIV-2 পরীক্ষা দুটি করা হয়।

হেপাটাইটিস (Hepatitis B or C)

রক্তদাতার দেহে হেপাটাইটিস বি অথবা হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়। এই জীবাণুগুলো জন্ডিসের জন্য দায়ী। আর রক্তের মাধ্যমে এই জীবাণুগুলো পোষক দেহ পরিবর্তন করতে পারে।

সিফিলিস (Syphilis)

রক্তদাতার রক্তে সিফিলিস এর জীবাণু পাওয়া গেলে সেটি রুগির জন্য ক্ষতিকর। তাই সিফিলিসের পরীক্ষা করানো হয়।

West Nile virus এর পরীক্ষা

এই ভাইরাস বহনকারী ব্যক্তি একটা সময় জ্বরে আক্রান্ত হয়। ম্যালেরিয়ার মত এই জ্বরের জন্য দায়ী West Nile virus টি মশার কামড় বা আক্রান্ত পাখির কামড়ের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। একই সাথে রক্ত বা অন্য যে কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সময়ও ছড়াতে পারে। তাই এর উপস্থিতিও পরীক্ষা করা হয়।

উপরের পরীক্ষাগুলোর পাশাপাশি প্রয়োজন অনুসারে অন্যান্য পরীক্ষাও করা হতে পারে। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সহ রক্তবাহিত রোগের টেস্ট করা হয়। একই সাথে জানা যায় রক্তদাতার রক্তের বিভিন্ন উপাদান যেমন রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ইত্যাদি তথ্যাবলী। একজন রক্তদাতা নিয়মিত রক্ত দিলে এইরকম অনেকগুলো রোগ সম্পর্কে সব সময় আপডেটেড থাকতে পারেন। যা অনেক বড় রকমের সমস্যার প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।


Tech Analyst
– Techmorich