বর্তমানে সব কিছুই কন্টেন্ট নির্ভর। বই, ম্যাগাজিন, সংবাদ পত্র ইত্যাদি সব জায়গায় এখন ভালো কন্টেন্ট এর উপর নির্ভর করে ব্যাবসার কাটতি। আর বর্তমানে সবচেয়ে বেশী যে জায়গটি প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে সেটি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং এর কন্টেন্ট। অনলাইনের চ্যেলেঞ্জটা হচ্ছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইউজারদের বা পাঠকদের আকৃষ্ট করতে হয়। যার ফলে খুব অল্প কথার মধ্যেই সেরে ফেলতে হয় মূল কথাগুলো।
তথ্য প্রজুক্তিতে প্রতি নিয়ত সংযোজন হচ্ছে নতুন শব্দ, নতুন কলা কৌশল। তেমনি আর্টিকেল বলতে যেমন কিছু শব্দ বা বাক্যকে আমরা বুঝি তেমনি কিছু সংযুক্তি এসেছে কন্টেন্ট এবং কন্টেন্ট ডিজাইন এর উপর। কন্টেন্ট মানে শুধু একটি আর্টিকেল নয়। এটা হতে পারে একটি স্লাইড প্রেজেন্টেশন বা একটি ছবি, আবার একটি ভিডিও ও হতে পারে। অর্থাৎ একটি আর্টিকেল, ছবি বা ভিডিও যার মাধ্যমে আপনি আপনার পাঠক বা ইউজারের কাছে যে তথ্যটি পৌছে দিতে চাচ্ছেন সেটাই হচ্ছে কন্টেন্ট।
একজন ভালো কন্টেন্ট রাইটার হয়ে উঠতে হলে প্রয়োজন সময় এবং কঠিন অধ্যবসায়। যে গুণাবলীগুলো না থাকলেই নয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হচ্ছে –
১. পাঠককে মানসম্মত লিখা উপহার দিতে চাইলে সমৃদ্ধশালী ভাষা প্রয়োগের বিকল্প নেই। সেজন্য যে ভাষায় আপনি লিখছেন সেই ভাষার জ্ঞান ভান্ডার এ অগাধ বিচরণ থাকতে হবে।
২. শব্দচয়নের সময় অর্থবহ শব্দ ব্যাবহার করতে হবে এবং অর্থবহ বাক্য তৈরি করতে হবে।
৩. সাধু চলিত মিশ্রিত বাক্য পরিহার করতে হবে।
৪. অনলাইনে পাঠক দীর্ঘ সময় ধরে লিখা পড়ার ধৈর্য হারিয়ে ফেলে তাই যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে ৫০০ থেকে ৬০০ শব্দের মধ্যে থাকা।
৫. কন্টেক্স বুঝে কন্টেন্ট লিখার চেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ যে টপিক্স নিয়ে লিখছেন তা না লিখে অন্য কোন বিষয় নিয়ে বেশী লিখে ফেলছেন কিনা সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
৬. যে টপিকটির উপর লিখবেন তার উপর কিছু রিসার্চ করে নিতে হবে। এখন অনলাইনে সার্চ করেই অনেক সহজে খুঁজে পাওয়া যায় সুতরাং সেই বিষয় সম্পর্কে একটু পড়াশনা করে নিন তাতে আপনার লিখগুলো আরও বেশি কার্জকর হবে এবং গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
৭. যদি টেকনিক্যাল রাইটিং এর উপর কোন কন্টেন্ট লিখতে চান তাহলে তার সম্পর্কে আগে ভালো করে জেনে নিতে হবে।
৮. ওয়েবসাইটে SEO / SXO বলে একটি বিষয় আছে। আপনার লিখার উপর নির্ভর করবে ট্র্যাফিক বা ইউজার কি পরিমাণ আপনার সাইট ভিজিট করবে। সুতরাং, কন্টেন্ট তৈরী করার আগে রিসার্চ করে নিন কোন কোন শব্দগুলো সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে আপনার লিখাটা তৈরী করবেন।
৯. কন্টেন্ট ডিজাইনের ক্ষেত্রে কোন ছবি যুক্ত করতে চাইলে সেটি লিখার সাথে মিল রেখে ছবি নির্বাচন করুন। সেক্ষেত্রে ছবিটিকেও আগে সুন্দর করে এডিট করে নিতে হবে।
১০. ছবি নির্ভর কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রে সবসময় হাই রেজুলেশন এর ছবি ব্যাবহার করতে হবে। ছবির ব্রাইটনেস এবং কন্ট্রাস্ট যেন ছবির উপর লিখাগুলোর সাথে কনফ্লিক্ট না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।
১১. তাড়াহুড়ো করে লিখলে লিখার মধ্যে প্রচুর ভুল ভ্রান্তি থাকার সম্ভাবনা থাকে ফলে পাঠক সেই সাইটের লিখার প্রতি একবার আগ্রহ হারিয়ে ফেললে পরবর্তিতে আর নাও আসতে পারে। তাই মানসম্মত লিখার জন্য সময় নিয়ে ধীরস্থিরভাবে লিখতে হবে।
১২. প্লেজারিজম (কপি-পেষ্ট) থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৩. জানতে হলে পড়তে হবে। এবং নিজেকে সবসময় আপডেট করতে হবে।
দেশে এবং দেশের বাইরে কন্টেন্ট রাইটার বা ডিজাইনারের রয়েছে প্রচুর চাহিদ। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরে ভালো কন্টেন্ট ডিজাইনার এবং রাইটারের অনেক ঘাটতি রয়েছে। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এবং চাকরি ক্ষেত্রে এর চাহিদার কথা বিবেচনা করলে এর ক্যারিয়ার তৈরী করাটা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। দক্ষ কন্টেন্ট ডিজাইনার বা রাইটার হিসেবে মানসম্মত ক্যারিয়ার তৈরি করার পাশাপাশি এ পেশায় স্বাধীনভাবে ঘরে বসে কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠারও সুবর্ন সুযোগ রয়েছে।
আপনার পথ চলা শুভ হোক!
Nilim Ahsan
CEO, Cofounder – Userhub
Editor – Techmorich