আমরা আছি বিশাল এক জগতে যেখানে প্রতিদিন চলার পথে ক্ষুদ্র প্রাণীদের রীতিমত উপেক্ষা করে চলি, তথচ এগুলোর প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকটেরিয়ার মত ক্ষুদে জীব যে এত কত অবদান রাখতে পারে এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেক সীমিত। বিস্ময়কর ব্যাপার হল এই অনুবীক্ষণিক জীবের বেড়ে ওঠা, জটিল দূরহ পরিবেশে আবার কখনবা এরও উর্ধে। মজার বিষয় হল কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে যাদের শীতল পরিবেশ এতই পছন্দ যে তারা নিজেরাই বরফ বানিয়ে ফেলে! Pseudomonas syringae এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া, একটি উদ্ভিদ Pathogen যা ফসলের ঠান্ডা জনিত ক্ষতির জন্য দায়ী। ব্যাকটেরিয়াটি এর চারদিকে এত ভালোভাবে বরফ তৈরী করতে পারে যে স্কি রিসর্টে এদের ব্যাবহার করা হয়। বিজ্ঞানীরা অনেক দিন থেকেই জানেন যে জীব বিজ্ঞান আর আবহাওয়া বিজ্ঞানে এর অবদান অনেক কারণ, এরা তাপমাত্রা ফ্রিজিং পয়েন্টের উপরে থাকা অবস্থায়ও বরফ তৈরী করতে পারে।
কিন্তু কিছুদিন আগ পর্যন্তও বিজ্ঞানীরা কাছ থেকে লক্ষ করেননি যে আসলে এই ব্যাকটেরিয়া আর পানির অনুর মধ্যে এমন কি ঘটে যা বরফ তৈরী করে। একটা ডিটেইল্ড ইমেজিং টুল ব্যাবহার করে গবেষকেরা এই ব্যাকটেরিয়ার মেমব্রেনের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু প্রটিন দেখেন যা নিপুন ল্যাটিস বানাই যার উপর পানির অনুগুলো এসে জমা হয়ে বরফের সৃষ্টি করে।
গবেষকেরা Sum frequency generation spectroscopy নামক এক ধরনের পদ্ধতি ব্যাবহার করেন যা জটিল কিছু রে ছোট কোন কনা বা বস্তুর উপর ফেলে এর ভেতরের কার্যাদি দেখতে পান। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা জানতে পারেন যে P. syringae ব্যাকটেরিয়ার সেল মেমব্রেনের কিছু প্রটিন তার কাছের পানির অনুগুলোর অবস্থার খুব সামান্য পরিবর্তন ঘটাই যার ফলে অনুগুলো অনেক ভালো ভাবে কাছা কাছি একে অপরের সাথে ল্যাটিসের উপর ভালো ভাবে আটকে থাকতে পারে, যেমনটা সাধারণ বরফে দেখা যায়।
এর পর ব্যাকটেরিয়ামগুলো ভাইব্রেসোনাল এনার্জি ব্যাবহার করতে পারে যা পানির অনুগুলোর মধ্যকার তাপ অপসারন করে আর বরফ তৈরী করে। এই সব কাজ ব্যাকটেরিয়াটি অনেক সহজে করে ফেলতে পারে। গবেষকেরা মন্তব্য করেছেন যে, P. syringae ব্যাকটেরিয়ার দেহ এই কাজের জন্য উপযুক্ত ভাবে তৈরী হয়েছে। এর সেল মেমব্রেনে থাকা এন্টি ফ্রিজ প্রটিন ব্যাকটেরিয়াকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে যখন এই কাজ হয়। এই ধরনের ছোট ছোট নতুন খোঁজ আমাদের পৃথীবির পানি চক্রে আর আবহাওয়ার উপর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। “Pseudomonas syringae ব্যাকটেরিয়ার কিছু দূর্লভ বৈশিষ্ট্য যা বিশ্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে যা পুর্বের ধারণার থেকেও বেশি।” তাহলে প্রশ্ন জাগতে পারে কেন এখনো পরিবর্তন আসছে না? এর কারণ হল এখন পর্যন্ত Pseudomonas syringae ব্যাকটেরিয়াকে শুধুমাত্র একটা উদ্ভীদ প্যাথজেন হিসেবেই দেখা হচ্ছে, বৈশ্বিক সমস্যার চাবি হিসেবে না।
Source- James Kremer and Sheng Yang He – Howard Hughes Medical Institute
Anika Afia Jahan Nodi
Techwriter