Emotionless is a disease

এলেক্সিথিমিয়া বা আবেগশুন্যতা যখন একটি রোগ

August ২৫, ২০১৫

Alexithymia এমন একটি রোগের নাম যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হয়ে থাকেন সম্পূর্ণ রূপে আবেগ-অনুভূতিহীন। দুনিয়ার কোন কিছুতেই যেন তার কিছু এসে যায় না। এই সমস্যার ভুক্তভোগীরা অত্যন্ত আনন্দ ঘন কোন মুহুর্ত যেমন উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হন, তেমনি ভাবে বেঁচে যান যে কোন দুঃসংবাদ বা কষ্টের অনুভূতি সহ্য করা থেকে। কালার ব্লাইন্ডনেস (বর্ণান্ধত্ব) এর মত এই রোগকেও বলা যায় ‘ইমোশনাল কালার ব্লাইন্ডনেস’।

সাধারণত মানসিক প্রতিবন্ধীরা স্বাভাবিক আবেগ-অনুভূতির উর্দ্ধে থাকেন। কিন্তু এলেক্সিথিমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মানসিক প্রতিবন্ধী বা মানসিক ভারসাম্যহীন নন। তারা অন্য আর দশটা মানুষের মতই জীবন যাপন করেন। কিন্তু কোন ভাল বা খারাপ সংবাদ তাদেরকে স্পর্শ করে না। এই রোগে আক্রান্ত এক রোগি তার প্রথম সন্তান হবার সময়ের কথা এভাবে বলেছিলেন যে, “শুনেছি সন্তানকে প্রথম দেখার পরে যে কোন মানুষই আবেগে আপ্লুত হয়। সেই সময়টা হয়ে থাকে তার জীবনের অন্যতম সেরা আর আনন্দঘন। কিন্তু আমার সন্তান হবার পর আমি তেমন কোন আনন্দ অনুভব করতে পারি নি। এটা আমাকে আহ্লাদিত করে নি”। একই রকম ভাবে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের পরিবার-পরিজন বা বন্ধুদের মৃত্যু সংবাদেও দুঃখিত হন না। যেন অনেকটা আনন্দ ও বেদনার বাইরের জগতে বসবাস তাদের।

এটা অনেকটা মানসিক রোগ হলেও পরবর্তীতে এটি শাখা বিস্তার করতে পারে দেহেও। এর ফলে দেহে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যথার উৎপত্তি হতে পারে। এছাড়াও মানুষ তার ভাল-মন্দ অনুভূতির জায়গা থেকেই নিজের দেহ ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেন। কিন্তু এলেক্সিথিমিয়ায় আক্রান্তরা যেহেতু রীতিমত অনুভূতি শূন্য তাই তারা তাদের নিজের প্রতি যত্নবান হন না।

পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে এর কিছু খারাপ প্রভাব রয়েছে। এমন অনুভূতি শূন্যতার কারণে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে, বা পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে। যা জীবনকে করে তুলতে পারে দুর্বিষহ!

এর থেকে পরিত্রাণের জন্য ডাক্তারগণ রুগিদেরকে শরীরচর্চা, বই পড়া ও সামাজিক কর্মকান্ডে যুক্ত হবার পরামর্শ দেন। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে নিয়মিত কাউন্সিলিং ও ওষুধ সেবনেও অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়া সম্ভব।

এলেক্সেথিমিয়ায় আক্রান্ত হবার নির্দিষ্ট তেমন কোন কারণ এখনো পাওয়া যায় নি। এর কারণ উদঘাটন ও চিকিৎসার জন্য গবেষকগণ কাজ করে যাচ্ছেন।

টেক এনালিস্ট – টেকমরিচ