বিশ্বে ই-কমার্সকে সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে উদ্যোক্তারা “ডিজাইন থিঙ্কিং” এর সাহায্য নিচ্ছেন।

March ১০, ২০১৯

ক্রেতারা সবসময়ই নিরুপায়। কারন একই সাথে তাদের বেস্ট প্রোডাক্টটি দরকার এবং তারা বিশ্বাস করতে চায় যে বেস্ট প্রোডাক্টটি’ই তারা কিনছে। আর তাই মানুষ সবসময় তার অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল। প্রচার এবং প্রসারের কাটতির জন্য ‘নতুন’ শব্দটি সহজেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। নতুন সব কিছুর উপরই ক্রেতারা দুর্বল। উজ্জ্বল, চকচকে জিনিষ যেমন সহজেই প্রলুব্ধ করে তেমনই মান এবং দামের ব্যাপারেও তারা সচেতন। আর বাজারে যখনই নতুন কিছু আসে ভোক্তারা তার খবর গরম গরম পেয়ে যাচ্ছে  অনলাইন শপগুলোর মাধ্যমে।

তাই নিঃসন্দেহে  ই কমার্স সিস্টেম ভোক্তাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এই সিস্টেম  গ্রাহকের অভিজ্ঞতাকে আগের চেয়ে অনেক সহজ ও দ্রুততর করে তুলেছে। ই কমার্সের মাধ্যমে অনলাইনে প্রতিদিন বিলিয়ন ডলারের বিনিময় হয়। যার ফলে ভোক্তারা দিনে দিনে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে করতে আরও বেশি সতর্ক এবং বুদ্ধিমান হয়ে উঠছে। যুক্তি তর্ক, রিভিউ, ফিডব্যাক ইত্যাদির সাহায্যে আরো ভালোভাবে জেনে বুঝে ভোক্তারা এখন  কেনাকাটায় পটু হয়ে উঠেছে।

একদিকে ভোক্তারা যেমন অভিজ্ঞ হয়ে উঠছে তেমনি উদ্যোক্তা ও ব্যাবসায়ীরা চরম প্রতিযোগীতামূলক বাজারে, ই কমার্সের জমজমাট জমানায় ক্রেতাদের কিভাবে সন্তুষ্ট করা যায়,  কিভাবে প্রযুক্তিকে সর্বস্তরে আরো সহজতর উপায়ে পৌছে দেয়া যায়, কিভাবে সেবার মান এবং প্রোডাক্টের মান সম্পর্কে ক্রেতাদের মধ্যে বিশ্বস্ততা অর্জন নিশ্চিন্ত করা যায় এসব কিছুই এখন তাদের ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু।

এসকল ভাবনার সঠিক এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন  উত্তর পেতে উন্নত বিশ্বে সবাই শরণাপন্ন হচ্ছে “ডিজাইন থিঙ্কিং” পদ্ধতির উপর। কারন “ডিজাইন থিঙ্কিং” এর মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা খুব সহজ একটি উপায়। ইউজার বা ভোক্তাকে আরো ভালোভাবে জানা, তাদের বিড়ম্বনা ও ভোগান্তিগুলো চিহ্নিত করা, অথবা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা দিয়ে ই কমার্স স্টোরটি ডিজাইন করা এ সব কিছুই সহজ করে দিতে পারে ডিজাইন থিঙ্কিং।  

ডিজাইন থিঙ্কিংঃ  ভোক্তাকে জানুন এবং সমস্যা চিহ্নিত করে  সমাধান করুন।

আপনি যদি আপনার ইউজার বা ভোক্তাকে  খুশী করতে চান তাহলে তাদের চাহিদাগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করতে হবে। সমস্যার জের ধরে  প্রযুক্তি ও মানব অভিজ্ঞতার মধ্যে সহজভাবে সংযোগ ঘটাতে হবে। আর ডিজাইন থিঙ্কিং আপনার এই কাজটি সহজ করে তুলতে পারে।

অনলাইনে ইউজারকে কেনাকাটায় অভ্যস্ত করে তোলা সহজ কিছু নয়। ই কমার্স সিস্টেমে অভ্যস্ত করে তুলতে হলে ইউজারের মধ্যে আগে বিশ্বস্ততা এবং নির্ভরশীলতা তৈরি করতে হবে। সিস্টেম/এপকে এমন সহজ করে তুলতে হবে যাতে ইউজাররা ডিভাইস বা মেশিনের প্রতি ভীতি কাটিয়ে অনলাইন কেনাকাটায় অভ্যস্ত উঠতে পারে।

এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিনলব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে ক্রেতার পছন্দ অপছন্দ,  বাজেট ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার ফলে ই কমার্স ব্যাবসাকে অনেক সহজ করে তুলেছে। একটি সফল অনলাইন শপ বা ই কমার্স সিস্টেম এর যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিৎ তা হলো  –

সহজ সার্চিং অপশন,
সঠিক পণ্যের লিস্ট ক্যাটাগর্‌
লোকালিটি অনুযায়ী পণ্যের শব্দচয়ন,
পণ্যের সঠিক বিবরন,
ভোক্তার বিহেভিয়র এবং কি খুঁজছে এসব কিছু পর্যবেক্ষনের ব্যাবস্থা,
ইউজারের বয়স অনুযায়ী প্রোডাক্ট সাজেস্ট করা,
লোকেশন ডিটেক্ট করার ব্যাবস্থা রাখা,
ডেলিভারির সময় এবং লোকেশন আগেই নির্বাচন করতে দেবার সুযোগ দেয়া
সর্বোপরি সঠিক সময়ে সঠিক পণ্য ডেলিভারির নিশ্চয়তা প্রদান করা ইত্যাদি।

ডিজাইন থিঙ্কিং এর মাধ্যমে অনেক গুলো মানুষের মধ্যে যে ব্রেইন স্টর্মিং সেশনগুলো হয় তা থেকে আপনি শিখতে পারবেন কোলাবরেশনের মাধ্যমে প্রবলেম কিভাবে ফাইন্ড করতে হয়, রিসার্চ কিভাবে করতে হয় এবং আরো অনেক কিছু যা আপনার কাজকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করবে।